শাহবাগ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

শাহবাগ থানা

মানচিত্র
প্রশাসন
ওয়ার্ড ৫১, ৫২, ৫৩
সংসদীয় এলাকা ঢাকা-১০ (রমনা-তেজগাঁও)
পৌর সংস্থা ঢাকা সিটি কর্পোরেশন
স্থানাংক ২৩°৪৪'১৮" N, ৯০°২৩'৪৫" E
র‌্যাব এলাকা RAB 3
উপাত্ত

ঢাকা শহরে শাহবাগের অবস্থান
স্থাপিত 2004*
ক্ষেত্রফল 4.2 km²*
জনসংখ্যা 112,000*
HQ Shahbag Intersection
নিকটবর্তী থানা লালবাগ, ধানমন্ডি, রমনা, কোতোয়ালী, পল্টন, নিউ মার্কেট]*
ওয়েবসাইট শাহবাগের উপরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ওয়েবপেইজ]
* Dhaka Metropolitan Police data

শাহবাগ (আ-ধ্ব-ব: [ˈʃabag]) বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের একটি এলাকা এবং প্রশাসনিক থানা। এটি ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র।[১]। শাহবাগ এলাকাটি পুরানো ঢাকা ও নতুন ঢাকার মধ্যকার সীমানায় অবস্থিত। এই এলাকার পত্তন হয় ১৭শ শতকে মোগল শাসনামলে, যখন পুরানো ঢাকা ছিলো সুবা বাংলার রাজধানী এবং মসলিন বাণিজ্যের কেন্দ্র। শাহবাগের আদি নাম ছিলো "বাগ-ই-বাদশাহী" (ফার্সি: রাজার বাগান)। তবে পরবর্তীতে এটি সংক্ষিপ্ত নাম শাহ (ফার্সি:شاه, রাজা) বাগ (ফার্সি: باغ, বাগান) নামে পরিচিতি লাভ করে। [২] মোগল আমলের অবসানের পরে এটি পরিত্যক্ত হয়, তবে উনবিংশ শতকের মধ্যভাগে এই এলাকার চারপাশে নির্মিত হয় অনেক অট্টালিকা এবং ব্রিটিশ শাসনের স্থানীয় কেন্দ্র হিসাবে নতুন ঢাকার বিস্তারের সাথে সাথে শাহবাগ আবার গুরুত্ব লাভ করে।

শাহবাগে বাংলাদেশের বেশ কিছু শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অবস্থিত, যাদের মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের সর্ব বৃহত এবং সর্বপ্রাচীন সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এবং এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। শাহবাগে রয়েছে বেশ কিছু বাজার ও মার্কেট এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে শাহবাগ এলাকা বিভিন্ন উৎসবের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এখানে প্রতিবছর ধুম ধামের সাথে বাংলা নববর্ষ ও বসন্ত উৎসব পালিত হয়ে থাকে।

শাহবাগের অনেক পুকুর, দালান কোঠা এবং বাগান অনেক কবি, সাহিত্যিক, লেখক, গায়ক শিল্পীদের অনুপ্রানিত করেছে। থানা এলাকার মধ্যখানে অবস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জাতীয় ইতিহাসের অনেক রাজনৈতিক আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ১৯০৫ সালের নিখিল ভারতীয় মুসলমান শিক্ষা সম্মেলন, যা পরবর্তীতে নিখিল ভারত মুসলিম লীগে পরিণত হয়। যারা ভারত বিভাগ এবং পাকিস্তানকে রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলায় অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেন; ১৯৫২ সালের বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতী প্রদানের জন্য গড়া ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, যা জাতিকে স্বাধীনতার দিকে নিয়ে যায়। এখানেই শেখ মুজিবুর রহমান মার্চ ৭, ১৯৭১ সাকে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের কাছে থেকে স্বাধীনতার ডাক দিয়ে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন এবং এখানেই পরবর্তীতে পাকিস্তান সেনা বাহিনী বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মসমর্পন করে। তখন থেকেই এ স্থান ছাত্র ও অন্য সম্প্রদায়ের অন্যায়ের বিরুদ্ধে অন্দোলন করে তোলার মঞ্চে পরিনত হয়েছে।[৩][৪][৫]


সূচিপত্র

[সম্পাদনা] ইতিহাস

যদিও ঢাকা শহরের পত্তন হয়েছিল সপ্তম শতাব্দির দিকে,[৬] কিন্তু শাহবাগে শহুরে স্থাপনার প্রমাণ পাওয়া যায় কিছু স্মৃতিস্তম্ভ থেকে যা ১৬১০ খ্রিস্টাব্দের পরের, যখন মুঘল সম্রাট ঢাকাকে প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন এবং শাহবাগের বাগান গড়ে তোলেন। এসকল স্মৃতিস্তম্ভের মধ্যে রয়েছে ঢাকা গেট , যা বর্তমানে শাহবাগে বাংলা একাডেমীর কাছে অবস্থিত, এটি বাংলার মুঘল সুবাদার মীর জুমলা তৈরি করেছিলেন, যিনি ১৬৬০ সাল থেকে ১৬৬৩ সাল পর্যন্ত বাংলার সুবাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[৭] মরিয়ম সালেহা মসজিদ', নীলক্ষেত-বাবুপুরা তে একটি তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মুঘল ধাঁচের মসজিদ, যা নির্মাণ করা হয়েছিল ১৭০৬ খ্রিস্টাব্দে।[৮] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের মুসা খানের মসজিদ, যা ১৭ শতকে তৈরি বলে মনে করা হয়।[৯] এবং খাজা শাহবাজের মসজিদ-মাজার,[১০] যা ঢাকা হাই কোর্টের পিছনে অবস্থিত এবং ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দে খাজা শাহবাজ কতৃক নির্মিত। খাজা শাহবাজ ছিলেন রাজ প্রতিনিধি এবং সম্রাট আওরঙ্গজেবের পুত্র মুহাম্মদ আজমের সময়কালীন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বা সওদাগর।[১১]

খাজা শাহবাজের মসজিদ/মাজার
খাজা শাহবাজের মসজিদ/মাজার

মুঘল শাসনের পতনের সাথে সাথে শাহবাগের বাগানগুলোর অযত্ন ও অবহেলার স্বীকার হয়। ১৭০৪ খ্রিস্টাব্দে যখন প্রাদেশিক রাজধানী মূর্সিদাবাদে স্থানান্তরিত হয় তখন এ সম্পত্তির মালিক হন নায়েব নাযিম, যিনি মূর্সিদাবাদের নবাবের প্রতিনিধি এবং পূর্ব বাংলার প্রদেশিক ডেপুটি-গভর্নর ছিলেন। যদিও ঢাকায় বৃটিশ শাসন শুরু হয়েছিল ১৭৫৭ সালে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি জেলা প্রশাসক গ্রিফিথ কুকের পৃষ্ঠপোষকতায় শাহবাগের বাগান গুলো ১৯ শতকের শুরু পর্যন্ত টিকে ছিল,[১২] এবং ঢাকায় আর্মেনি সম্প্রদায়ের নেতা পি. আরাতুন এর সাথে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন।[১৩] ১৮৩০ সালে জেলা কালেক্টর হেনরি ওয়াল্টারের গঠিত ঢাকা কমিটির (ঢাকা শহর উন্নয়নের লক্ষ্যে) বিচক্ষণতায় শাহবাগ সহ রমনা এলাকাকে ঢাকা শহরের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[১৪]প্রায় এক যুগ পরে, ঢাকার নবাব পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা এবং নবাব খাজা আব্দুল গনির পিতা নবাব খাজা আলিমুল্লাহ, শাহবাগের জমিদারী ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানীর কাছ থেকে কিনে নেন। ১৮৬৮ সালে তার মৃত্যুর পর এ সম্পত্তি তার দৌহিত্র স্যার নবাব খাজা আহসানুল্লাহর কাছে হস্তান্তর করা হয়। ২০ শতকের শুরুর দিকে আহসানুল্লাহর পুত্র, স্যার নবাব খাজা সলিমুল্লাহ শাহবাগের বাগানকে ছোট দুই ভাগে ভাগ করে বাগানগুলোর হারানো সৌন্দর্য্যের কিছু অংশ ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন, বর্তমানে যা শাগবাগ এবং পরিবাগ নামে রয়েছে। আহসানুল্লাহ এক কন্যা পরিবানুর নামে এ নামকরণ করা হয়।[১৫]

রমনা গেট থেকে হাতিতে চড়া হতো, রেস কোর্স, ১৮৭৫
রমনা গেট থেকে হাতিতে চড়া হতো, রেস কোর্স, ১৮৭৫

১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ এবং ঢাকা পূর্ব বাংলার নতুন প্রাদেশিক রাজধানী হওয়ায়, পুরো ঢাকা, বিশেষ করে নতুন নির্মিত ফুলার রোডে (পূর্ব বাংলার প্রথম প্রতিনিধি গভর্নর স্যার মাম্পফিল্ড ফুলার এর নামে নামাঙ্কৃত) পাশ দিয়ে দ্রুত ইউরোপীয় ধাঁচের দালান কোঠা তৈরি হতে থাকে। এ সময়েই ঢাকার শাহবাগে প্রথম চিড়িয়াখানা চালু হয়।[১৬][১৭]

১৯৪৭ সালে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তানের পত্তনের পর, ঢাকা পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী হয়, অনেক নতুন নতুন ইমারত তখন তৈরি হতে থাকে, এর মধ্যে ১৯৬০ সালের বাংলাদেশ বেতার অফিস,[১৮] (তৎকালীন পাকিস্তান রেডিও), জাতীয় বেতার কেন্দ্র, ঢাকা রেস-কোর্স (বর্তমানে অপ্রচলিত) সহ পূর্ব বাংলার দ্বিতীয় বৈদুতিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র অন্যতম। মার্চ ৭, ১৯৭১ সালে শেখ মুজিবর রহমান শাহবাগের কাছে এই রমনা রেসকোর্সের ময়দান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দেন। যখন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়, এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এর পাকিস্তান ব্যুরো প্রধান আর্নোল্ড জেইটলিন ও ওয়াসিংটন পোষ্ট এর রিপোর্টার ডেভিড গ্রীনওয়ে সহ অনেক বিদেশী সাংবাদিক শাহবাগ মোড়ের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে (বর্তমানে হোটেল শেরাটন) অবস্থান নেন। হোটেলটিকে নিরপেক্ষ এলাকা ঘোষোণা করা সত্বেও[১৯][২০][২১] পাকিস্তানী সেনাবাহিনী এবং মুক্তি বাহিনী দুই পক্ষের হামলারই স্বীকার হয়।[২২][২৩] যুদ্ধের শেষে, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল কে পূর্ব পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্বসমর্পনের স্থান হিসেবে প্রথমে পছন্দ করা হলেও[২২] পরবর্তীতে আত্মসমর্পনের জন্য রমনা পার্কের (বর্তমানে সরোয়ার্দি উদ্দ্যান) এক জায়গায় স্থান নির্বাচন করা হয়।

[সম্পাদনা] পৌর নকশা

স্থাপনাসমূহ
বিএসএমএমইউ | বার্ডেম
হোটলে শেরাটন | চারুকলা ইনস্টিটিউট
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর
কেন্দীয় পাবলিক লাইব্রেরী
বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ এবং কবরস্থান | আইবিএ, ডিইউ
ঢাকা ক্লাব | শিশু পার্ক
টেনিস ফেডারেশন| পুলিশ কন্ট্রোল রুম

৪.২ square কিলোমিটার (১.৬ mi²) এলাকা এবং ২০০৬ সালের জরীপ অনুযায়ী প্রায় ১১২,০০০ লোকের বাসস্থান[২৪] শাহবাগ মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলে সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে প্রায় ১.৫ থেকে ১৩ মিটার (৫ থেকে ৪৩ ফুট) উচুতে অবস্থিত।[২৫] ঢাকার অন্যান্য স্থানের মত এখানকার গড় তাপমাত্রা ২৫ °সে (৭৭ °F) এবং মাসিক তাপমাত্রা জানুয়ারিতে ১৮ °সে (৬৪ °F) এবং আগস্টে ২৯ °সে (৮৪ °F) এর মধ্যে উঠানামা করে। বার্ষিক বৃষ্টিপাতের প্রায় ৮০% ভাগ যার পরিমাণ ১,৮৫৪ mm (৭৩ in) বর্ষিত হয় মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।[২৬]

শাহবাগ এবং তার সংলগ্ন এলাকা আকৃতিতে প্রায় আয়তাকার , যা পূর্বে রমনা পার্ক থেকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত বিস্তৃত; পশ্চিমে সোনারগাও রোড পর্যন্ত; দক্ষিণে ফুলার রোড এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়[২৭] থেকে সরোয়ার্দি উদ্দ্যান (পূর্বে রমনা রেসকোর্স) এবং উত্তরে মিন্টু রোড, হোটেল শেরাটন এবং ডায়াবেটিক হাসপাতাল পর্যন্ত বিস্তৃত।

শাহবাগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) নিয়ন্ত্রন কক্ষ ছাড়াও রয়েছে ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই অথোরিটি সাবস্টেশন। তিন নেতার সমাধিস্থল- বাঙালি রাজনীতিবিদ এ. কে. ফজলুল হক(১৮৭৩-১৯৬২), পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হোসেই শহীদ সরওয়ার্দি (১৮৯২-১৯৬৩), এবং পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং গভর্নর জেনারেল খাজা নাজিমুদ্দিন (১৮৯৪-১৯৬৪) সবগুলোই শাহবাগে অবস্থিত। শাহবাগ মোড় এবং শাহবাগ থানায় আরও যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তা হলঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, বুয়েট, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস এডমিনিস্ট্রেশন একাডেমী, বাংলাদেশ শেখমুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ[২৮]), দেশের একমাত্র সরকারী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, চারুকলা ইন্সটিটিউট, আইবিএ, আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউট, উদয়ন বিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি ল্যাবটরি স্কুল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুল। আরও যে সকল সরকারী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরী এবং শিশু একাডেমী, শিশুদের জাতীয় একাডেমী।

শাহবাগ মোড় অত্র এলাকার কেন্দ্রবিন্দু যেখানে প্রচুর উল্ল্যেখযোগ্য স্থাপনা রয়েছে। তন্মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হল হোটেল শেরাটন [২৯] (সাবেক হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, তৎকালীন ঢাকার দ্বীতিয় পাঁচ তারকা বিশিষ্ট হোটেল); শহরের সবচেয়ে পুরাতন ও বৃহদ ঢাকা ক্লাব যা ১৯১১ সালে প্রতিষ্ঠিত, জাতীয় টেনিস কমপ্লেক্স, শিশুপার্ক (ঢাকার সবচেয়ে প্রাচীন শিশু পার্ক, এখানে সপ্তাহে ১ দিন সুবিধাবঞ্চিত ও অসচ্ছল শিশুদের বিনামূল্যে প্রবেশ করতে দেয়া হয়।), ঢাকার প্রথম বার সাকুরা বার এবং প্রথম আউটডোর বার পীকক বার শাহবাগেই অবস্থিত। ফার্মগেট, গুলিস্থান, মহাখালী এবং মগবাজারের মত শাহবাগ চৌরাস্তাটি ঢাকার জন-পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে।

শাহবাগের দ্বিতল বিশিষ্ট বাস, শহরের অন্যতম ব্যস্ততম বাস স্টপ
শাহবাগের দ্বিতল বিশিষ্ট বাস, শহরের অন্যতম ব্যস্ততম বাস স্টপ

এই থানায় রয়েছে বেশ কিছু হাসপাতাল, যা বাংলাদেশীদের চিকিৎসা সেবার জন্য মূল গন্তব্য। শাহবাগের মোড়ে রয়েছে ডায়াবেটিক এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ডিএবি[৩০]) , আরও রয়েছে বিআইআরডিইএম (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ রিসার্চ এন্ড রিহাবলিটেসন ইন ডায়াবেটিক, এন্ডোক্রিন এন্ড মেটাবোলিক ডিসওর্ডার) এবং বার্ডেম হাসপাতাল। বার্ডেম হাসপাতালের পাশেই আছে ইব্রাহিম মেমোরিয়াল কার্ডিয়াক হাসপাতাল, যা ডিএববি (ড্যাব) , এবং বার্ডেমের প্রতিষ্ঠাতা ডঃ মুহাম্মদ ইব্রাহিমের নামে নাম করণ করা হয়েছে। আরও যে সব সুযোগ সুবিধা এ এলাকায় আছে তার মধ্যে শাহবাগ মোড়ের বিএসএমএমইউ (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি) এবং শাহবাগের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

[সম্পাদনা] ঐতিহাসিক দালান কোঠা

অত্র এলাকায় নবাবদের সবচেয়ে পুরাতন ভবন ছিল সুজাতপুর প্যালেস, যা পাকিস্তান শাসনামলে পুর্ব-বাংলার গভর্ণরের বাসভবনেপ রূপান্তর করা হয়। আরও পরে এটি বাংলাদেশে, বাংলা ভাষা বিষয়ক সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ বাংলাএকাডেমীতে পরিবর্তিত হয়। প্যালেসের বেশ কিছু এলাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলন কেন্দ্রের [৩১][৩২] জন্য হস্তান্তর করা হয়। ১৯৭০ সালে এটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডের মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয়।

[সম্পাদনা] সাংস্কৃতি

প্রতিবছর ১৪ ফেব্রুয়ারি পরিবর্তিত দিনপঞ্জি অনুসারে প্রাপ্ত বসন্তের প্রথম দিনকে উংযাপন করতে বসন্ত উংসব পালিত হয়। ১৯৬০ এর শেষের দিকে শাহবাগ থেকে উদ্ভাবিত বসন্ত উংসব এখন ঢাকা শহরের একটি বৃহং উংসবে পরিণত হয়েছে। মুখে অঙ্কন, হলুদ জামা পড়া এবং স্থানীয় মেলা সহ অন্যান্য কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এ উংসব পালন করা হয় এবং একই প্রক্রিয়ার ভ্যালেণ্টাইন দিবসও উংযাপন করা হয়। শাহবাগ পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ উংযাপনের মূল কেন্দ্র। ১৯৬৫ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ঢাকার অধিবাসীরা এই দিনটিকে পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্দধে প্রতিবাদরূপে পালিত করতেন। উংসবের অন্যান্য ঐতিহ্য যথা: বৈশাখি শোভাযাত্রা এবং বৈশাখি মেলার সূচনা করে যথাক্রমে চারুকলা ইনস্টিটিউট এবং বাংলা একাডেমী। রমনা বটমূলে ভোরবেলা গান করার প্রথা শুরু করে ছায়ানট সঙ্গীত স্কুল।

বাংলাদেশের বৃহত্তম বইমেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রত্যেক বছরের ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে শাহবাগের বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়। দেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র উংসব- স্বল্পদৈর্ঘ্য ও মুক্ত চলচ্চিত্র উংসব প্রতি বছর গণ গ্রন্থাগার প্রাঙ্গনে পালিত হয়। চলচ্চিত্র উংসবের আয়োজক বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্র ফোরামের কার্যালয় রয়েছে আজিজ মার্কেটে।

২০০১ সালে পহেলা বৈশাখ উংযাপন চলাকালে একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ১০ ব্যক্তিকে হত্যা এবং ৫০ জনকে আহত করে। ইসলামিক জঙ্গী গ্রুপ হরকাতুল জিহাদকে উক্ত অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

[সম্পাদনা] তথ্যসূত্র

  1. Nawazish, Mohammed, "Bus Menace In Dhaka Streets", Bangladesh Observer, 2003-09-17. Retrieved on 2007-04-05. (written in English)
  2. Dhaka City under the Mughals. Dhaka City Corporation. Retrieved on 2007-04-05.
  3. Khan, Mubin S., "Eight days that shook the campus", Weekly Holiday, Bangladesh, August 2, 2002. Retrieved on 2007-04-12.
  4. "DU students on rampage: Student injured in road accident", The Independent, Bangladesh, May 10, 2006. Retrieved on 2007-04-12.
  5. "Environmentalists for steps to limit green house gas, global warming", The New Age, Bangladesh, November 12, 2006. Retrieved on 2007-04-12.
  6. Jatindramohan Rai quotes Rajtarangini by Kalhan in Dhakar Itihas, 1913
  7. Juberee, Abdullah, "Dhaka Gate at DU stands unnoticed", New Age, 2006-03-11. Retrieved on 2007-03-21.
  8. Mariam Saleha Mosque. Banglapedia. Retrieved on 2007-04-05.
  9. Musa Khan Mosque. Banglapedia. Retrieved on 2007-04-05.
  10. Khwaja Shahbaz's Mosque-Tomb. Banglapedia. Retrieved on 2007-04-05.
  11. Syed Aulad, Hasan (1912). Notes on the Antiquities of Dacca, 40–41.
  12. Ahmed, Sharifuddin (1986). Dacca, 131.
  13. Rahman Ali Taesh, Munshi; (trans. AMM Sharfuddin) (1985). Tawarikhey Dhaka, 158–159.
  14. Dhaka under the East India Company. Dhaka City Corporation. Retrieved on 2007-04-05.
  15. Paribagh. Banglapedia. Retrieved on 2007-04-05.
  16. Ramna Race course. Banglapedia. Retrieved on 2007-04-05.
  17. Shahbag. Banglapedia. Retrieved on 2007-04-05.
  18. Bangladesh Betar. Bangladesh Ministry of Information. Retrieved on 2007-04-05.
  19. Hasan, Khalid, "PostCard USA: Arnold Zeitlin’s Pakistan", Observer Magazine, 2006-11-12. Retrieved on 2006-11-12.
  20. Zeitlin, Arnold, ""I would rather die than sign any false statement"", The Daily Star, 2004-12-16. Retrieved on 2006-11-12.
  21. Badiuzzaman, Syed, "War and remembrance", Weekly Holiday, 2005-08-21. Retrieved on 2006-11-12.
  22. ২২.০ ২২.১ Khan, Md. Asadullah, "My Experience on the First Victory Day", Observer Magazine, 2004-12-16. Retrieved on 2006-11-12.
  23. Rashid, Harun Ur, "Gallant Urban Guerrillas of 1971", The Daily Star, 2004-12-17. Retrieved on 2006-11-12.
  24. Dhaka Metropolitan Police (2006-06-30). Shahbag Thana (in Bengali). Press release.
  25. S.A.T.M. Aminul Hoque. "Dhaka" (PDF). Disaster Management Committee, Dhaka City Corporation. Retrieved on 2007-04-17.
  26. Dhaka. Bangla 2000. Retrieved on 2007-04-17.
  27. Fun Facts. University of Dhaka. Retrieved on 2006-09-28.
  28. Homepage. BSMMU. Retrieved on 2006-09-28.
  29. Homepage. Dhaka Sheraton. Retrieved on 2006-09-28.
  30. Homepage. Diabetic Association of Bangladesh. Retrieved on 2006-09-28.
  31. The Place Where Bangladesh Is Alive. www.bangladeshlive.net. Retrieved on 2007-04-14.
  32. Kamol, Ershad, "A modern-day theatre tradition second to none", Daily Star, 2006-04-02. Retrieved on 2006-04-11.

[সম্পাদনা] বহিঃসংযোগ

শাহবাগ সম্পর্কে আরও তথ্য পেতে হলে উইকিপিডিয়ার সহপ্রকল্পে অনুসন্ধান করে দেখতে পারেন:

সংজ্ঞা, উইকি-অভিধান হতে
পাঠ্যবই, উইকিবই হতে
উক্তি, উইকিউক্তি হতে
রচনা সংকলন, উইকিউৎস হতে
ছবি ও অন্যান্য মিডিয়া, কমন্স হতে
সংবাদ, উইকিসংবাদ হতে

স্থানাঙ্ক: 23°44.3′N 90°23.75′E

অন্যান্য ভাষা