রাধাগোবিন্দ চন্দ্র

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

রাধাগোবিন্দ চন্দ্র (১৮৭৮ - ১৯৭৫) ভারত উপমহাদেশের সফলতম জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একজন। তিনি এ অঞ্চলে পর্যবেক্ষণমূলক জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। তার জন্ম তৎকালীন ভারতবর্ষের পূর্ববঙ্গে তথা বর্তমান বাংলাদেশে

রাধাগোবিন্দ চন্দ্রের একটি পোর্ট্রেট
রাধাগোবিন্দ চন্দ্রের একটি পোর্ট্রেট

সূচিপত্র

[সম্পাদনা] জীবনী

[সম্পাদনা] প্রাথমিক জীবন

রাধাগোবিন্দ ১৮৭৮ সালের জুলাই ১৬ তারিখে বর্তমান বাংলাদেশের যশোর সদর উপজেলার বকচর (বাগচর নামেও পরিচিত) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা গোরাচাঁদ স্থানীয় একজন ডাক্তারের সহকারী ছিলেন, আর মা পদ্মামুখ ছিলেন একজন সাধারণ গৃহিণী। বকচর পাঠশালায় অধ্যয়ন শেষে রাধাগোবিন্দ যশোর জিলা স্কুলে পড়াশোনা করেন। কিন্তু লেখাপড়ার প্রতি তার তেমন আগ্রহ ছিলনা। এ কারণে তিন তিন বার প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেও উত্তীর্ণ হতে পারেননি। ১৮৯৯ সালে তার বয়স যখন মাত্র ২১ বছর তখন তার সাথে মুর্শিদাবাদের গোবিন্দ মোহিনীর বিয়ে হয়। তখন মোহিনীর বয়স ছিল মাত্র ৯ বছর। বিয়ের পর রাধাগোবিন্দ শেষবারের মত প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ নেন এবং এবারও অকৃতকার্য হন। বারবার অকৃতকার্য হয়ে তিনি পড়াশোনার পাট চুকিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। তার এক ছেলের নাম কালু ও মেয়ের নাম বর্ষা

[সম্পাদনা] কর্মজীবন

পড়াশোনা শেষ করার পর প্রথম দুই বছর তাকে বেকার জীবন কাটাতে হয়। এরপর যশোর কালেকটরেট অফিসে খাজাঞ্চির চাকুরি পান। এসময় তার মাসিক বেতন ছিল মাত্র ১৫ টাকা। এ থেকে পরে তিনি ট্রেজারি ক্লার্ক ও কোষাধ্যক্ষের পদে প্রমোশন পান। অবসর নেবার সময় তার মাসিক বেতন ছিল ১৭৫ টাকা।

[সম্পাদনা] বাংলাদেশ ত্যাগ

বাংলাদেশে জীবনের অধিকাংশ সময় কাটালেও ১৯৪৭-এ ভারতবর্ষ বিভক্ত হয়ে পাকিস্তানভারত সৃষ্টির কিছুকাল পর তিনি ভারতে চলে যান। প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা মতে তিনি ১৯৬০ সালে ভারতে যান। এসময় তিনি অবসর জীবনযাপন করছিলেন। যশোরের তৎকালীন জেলা কমিশনার এম.আর. কুদ্দুস সহ অন্যান্য সরকারী কর্মকর্তারা তাকে ভারতে চলে যেতে বলেছিলেন। মার্কিন সরকার তাকে একটি দূরবীন উপহার দিয়েছিলো। এছাড়া তিনিও জমি বিক্রি করে একটি দূরবীন কিনেছিলেন। ভারতে যাবার সময় তিনি দূরবীন নিয়ে যান। কিন্তু বেনাপোল বন্দরে কাস্টম্‌স তার দূরবীন জবরদস্ত করে। এরপর ভারতে যেয়ে তিনি আমেরিকা ও ফ্রান্স সরকারের সাথে যোগাযোগ করেন। যশোরের ডিসি বাড়িতে এসে তার দূরবীন ফেরত দিয়ে যান।

[সম্পাদনা] মৃত্যু

১৯৭৫ সালের এপ্রিল ৩ তারিখে ৯৭ বছর বয়সে একরকম বিনা চিকিৎসায় ভারতের বারাসাতে রাধাগোবিন্দ মৃত্যুবরণ করেন। শেষ বয়সে তার বেশ আর্থিক অনটন দেখা দিয়েছিলো।

[সম্পাদনা] জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চা

ছোটকাল থেকেই রাধা আকাশের তারা সম্বন্ধে বিশেষ উৎসাহী ছিলেন। তিনি যখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়েন তখন তাদের পাঠ্যবই ছিল চারুপাঠ তৃতীয় ভাগ। এই গ্রন্থে অক্ষয়কুমার দত্ত রচিত একটি প্রবন্ধ ছিল যার নাম "ব্রহ্মাণ্ড কি প্রকাণ্ড"। এই প্রবন্ধ পড়ে তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। এ ব্যাপারে তিনি তার আত্মজীবনীমূলক পাণ্ডুলিপিতে লিখেছেন, "অক্ষয়কুমার দত্তের চারুপাঠ তৃতীয় ভাগ পড়িয়া, নক্ষত্রবিদ হইবার জন্যে আর কাহারো বাসনা ফলবর্তী হইয়াছিল কিনা জানি না, আমার হইয়াছিল। সেই উদ্দাম ও উচ্ছৃঙ্খল বাসনার গতিরোধ করিতে আমি চেষ্টা করি নাই।" ১০ বছর বয়সে যশোর জিলা স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর ইংরেজি শিক্ষার পাশাপাশি তিনি তারা দেখা শুরু করেন। বকচরের একতলা বাড়ির ছাদ থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় তিনি আকাশ দেখতেন। কিন্তু কোন উপযুক্ত জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক শিক্ষা না থাকায় প্রথমদিকে তাকে বেশ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

[সম্পাদনা] রাধাগোবিন্দের প্রভাব

[সম্পাদনা] পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কর্ম

[সম্পাদনা] পুরস্কার ও সম্মাননা

[সম্পাদনা] তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা] আরও দেখুন

অন্যান্য ভাষা