আর্জেন্টিনার ভাষা
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দক্ষিণ আমেরিকার স্পেনীয় ভাষী দেশগুলির মধ্যে আর্জেন্টিনা বৃহত্তম। স্পেনীয় ভাষা আর্জেন্টিনার সরকারী ভাষা। ১৫১৬ সালে এখানে স্পেনীয় উপনিবেশ স্থাপনকারীদের পা পড়ে এবং ১৮১৬ সাল পর্যন্ত দেশটি স্পেনের উপনিবেশ ছিল।
আর্জেন্টিনায় কথিত স্পেনীয় ভাষার কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে। আর্জেন্টিনার স্পেনীয় ভাষায় প্রচুর পরিমাণে স্থানীয় আদিবাসী ভাষার শব্দ প্রবেশ করেছে। এই আদিবাসী ভাষাগুলির মধ্যে আছে উত্তর-পশ্চিমের কেচুয়া ভাষা, উত্তর-পূর্বের গুয়ারানি ভাষা, এবং দক্ষিণের মাপুদুংগুন ভাষা। এই ভাষাগুলি আর্জেন্টিনার স্পেনীয় ভাষার উচ্চারণ ও ব্যাকরণকে প্রভাবিত করেছে। কেচুয়া আন্দিজ পর্বতমালা অঞ্চলের ভাষা, এটি ইনকা সাম্রাজ্যের সরকারী ভাষা ছিল।
এছাড়া অন্যান্য ইউরোপীয় ভাষাও আর্জেন্টিনার স্পেনীয়তে প্রভাব ফেলেছে। আর্জেন্টিনায় ১৯শ শতকের মাঝামাঝি থেকে ২০শ শতকের শেষভাগ পর্যন্ত যেসব ইউরোপীয় অভিবাসী এসেছে, তারা এই প্রভাবের কারণ। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী হল ইতালীয়রা, তবে পোলীয়, রুশ, ফরাসি ও জার্মানরাও আছে।
আর্জেন্টিনীয়রা দ্বিতীয় পুরুষ একবচনের জন্য Tu সর্বনামের বদলে Vos সর্বনাম ব্যবহার করে। আর্জেন্টিনীয় স্পেনীয় ভাষার শব্দভাণ্ডারে ইংরেজি শব্দের অনুপ্রবেশ অন্যান্য স্পেনীয়ভাষী দেশগুলির তুলনায় বেশি।
২০শ শতকের শুরুর দিকে আর্জেন্টিনায় হাজার হাজার ইতালীয় পাড়ি জমায়, ফলে দেশটিতে ইতালীয় বংশোদ্ভুত লোকের পরিমাণ ২৫% শতাংশ থেকে বেড়ে ৫০% হয়ে যায়। এই প্রথম প্রজন্মের আর্জেন্টিনীয়-ইতালীয়রা স্পেনীয় ও ইতালীয় ভাষার মিশ্রণে একটি জগাখিচুড়ি ভাষায় কথা বলত, যাকে বলা হত "কোকোলিচে"। কোকোলিচে ছিল স্থানীয় আর্জেন্টিনীয়দের জন্য হাস্যাস্পদ একটি ভাষা। স্থানীয় সংস্কৃতির বিভিন্ন মাধ্যমে - গল্প-উপন্যাস-নাটকে এগুলি হাসির উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হত। তবে পরবর্তী প্রজন্মের ইতালীয়রা স্পেনীয় ভাষা আত্মীকৃত করে নেয় এবং কোকোলিচেও নির্মূল হয়ে যায়।