ইয়াজুদ্দিন আহমেদ
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মহামান্য রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ড: ইয়াজুদ্দিন আহমেদ (জন্ম ফেব্রুয়ারি ১, ১৯৩১) বাংলাদেশের ১৭-তম রাষ্ট্রপতি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অবসর প্রাপ্ত অধ্যাপক। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৬ সালের ২৯ অক্টোবর তিনি এই পদে অধিষ্ঠিত হবার জন্য শপথ গ্রহণ করেন।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা করুন] জন্ম
তিনি ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৩১ সালে মুন্সিগঞ্জ জেলার নারায়নগঞ্জ গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মৌলভি মুহাম্মদ ইব্রাহিম। অধ্যাপক ইয়াজুদ্দিন আহমেদের স্ত্রী অধ্যাপিকা আনোয়ারা বেগম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানিবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষিকা। তিনি ঐ বিভাগের প্রধান ও শামসুন্নাহার হলের প্রভোস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ইয়াজুদ্দিন আহমেদ ও আনোয়ারা বেগমের এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে।
[সম্পাদনা করুন] শিক্ষা
১৯৪৮ সালে তিনি মুন্সিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাশ করেন এবং ১৯৫০ সালে মুন্সিগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজ থেকে ইন্টারমেডিয়েট পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫০ ও ১৯৫২ সালে যথাক্রমে বি.এস.সি ও এম.এস.সি পাশ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের উইসকোন্সিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালে যথাক্রমে এম.এস. ও পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
[সম্পাদনা করুন] কর্মজীবন
১৯৬৩ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন সহকারি অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। তিনি ১৯৬৪ সালে সহযোগি অধ্যাপক ও ১৯৭৩ সালে অধ্যাপক হন। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৩ পর্যন্ত অধ্যাপক ইয়াজুদ্দিন আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ হলের প্রভোস্ট ছিলেন। অধ্যাপক ইয়াজুদ্দিন আহমেদ ১৯৬৮-৬৯ ও ১৯৭৬-৭৯-এ দুই মেয়াদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ছিলেন। তিনি ১৯৮৯ থেকে ১৯৯১ নাগাদ পর পর দুই বার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন নির্বাচিত হন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল এবং বোর্ড অফ এডভান্স স্টাডিস এর সদস্য ছিলেন।
এছাড়াও অধ্যাপক ইয়াজুদ্দিন আহমেদ ১৯৯১ সালে তত্ত্বাবধ্যায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। তখন তিনি সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পালন। করেন। ১৯৯১-৯৩ সময়ে তিনি পাবলিক সার্ভিস কমিশিনের ও ১৯৯৫-৯৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেবার আগ পর্যন্ত তিনি স্টেট ইউনিভার্সিটির উপচার্যের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
অধ্যাপক ইয়াজুদ্দিন আহমেদ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৪৯তম সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের সদস্য ছিলেন। সেখানে তিনি প্যালেস্টাইন শরনার্থী এবং বিশ্ব-বানিজ্য ও উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেন।
তিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত। তার মধ্যে অন্যতম হল ফেডারেশন অফ ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সম্মিলিত শিক্ষক আন্দোলনের সম্মন্বয়ক ছিলেন।
[সম্পাদনা করুন] রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহন
ইয়াজুদ্দিন আহমেদ ২০০২ সালে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তিনি ২০০৬ সালের ২৯ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
[সম্পাদনা করুন] গবেষণা
এ যাবৎ অধ্যাপক ইয়াজুদ্দিনের দেশ ও বিদেশ মোট প্রকাশনার সংখ্যা ১২৫ টি। তিনি ধান গাছের উপর লবনাক্ততার প্রভাব ও বাংলাদেশের উপকুলিয় অঞ্চলে উচ্চ ফলনশীল ধান নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদান মাটিতে জমা করে রাখা এবং তা প্রয়োজন মত উদ্ভিদকে সরবরাহ করার পদ্ধতির উপর সফল গবেষণা চালান। এই কাজের ফলে যুক্তরাজ্যে তিনি ব্যাপক সাড়া জাগান। অধ্যাপক ইয়াজুদ্দিন আহমেদ তার শিক্ষকতা জীবনে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৮৩ সালে যুক্তরাজ্যের কর্ণেল বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৮৪ সালে বার্লিনে জার্মান টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও জার্মানের গ্যাটিঞ্জেন বিশ্ববিদ্যালয়।
[সম্পাদনা করুন] পুরস্কার
তিনি ইব্রাহিম মেমোরিয়াল গোল্ড মেডেল (১৯৮৭-৮৮), স্যার জ্ঞান অতিশ দিপঙ্কর গোল্ড মেডেল (১৯৯০), ক্রেস্ট (১৯৯১)এবং শিক্ষার জন্য একুশে পদক (১৯৯৫) লাভ করেন। তিনি আন্তর্জাতিক মৃত্তিকা বিজ্ঞানী সমিতি, ভারতীয় মৃত্তিকা বিজ্ঞানী সমিতি, বাংলাদেশ মৃত্তিকা বিজ্ঞান সমিতি এবং এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্য।
পূর্বসূরী: জমিরুদ্দিন সরকার |
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সেপ্টেম্বর ৬, ২০০২ - বর্তমান পর্যন্ত |
উত্তরসূরী: নেই |
বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টাবৃন্দ | ![]() |
---|---|
বিচারপতি হাবিবুর রহমান • বিচারপতি লতিফুর রহমান • অধ্যাপক ড: ইয়াজুদ্দিন আহমেদ • |