সুপারনোভা
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সুপারনোভা হলো একপ্রকার নাক্ষত্রিক বিস্ফোরণ যার ফলশ্রুতিতে নক্ষত্র ধ্বংস্বপ্রাপ্ত হয় এবং অবশেষরূপে থাকে নিউট্রন তারা কিংবা কৃষ্ণবিবর।
সূর্যের চেয়ে ত্রিগুণাধিক ভরের নক্ষত্রসমূহের অভ্যন্তরে উদজানের সংযোজন বিক্রিয়ায় তৈরি হয় হিলিয়াম, হিলিয়ামের সংযোজনে তৈরি হয় কার্বন এবং সেই কার্বনের সংযোজনে তৈরি হয় লোহা। লোহা তৈরির মধ্য দিয়ে কেন্দ্রীন বিক্রিয়াসমূহের পরম্পরার পরিসমাপ্তি ঘটে, কারন এর পরের বিক্রিয়াটি তাপশোষী। এমনই এক সময়ে নক্ষত্রের অভ্যন্তরস্থ বহির্মুখী চাপ যথেষ্ট পরিমান কমে যাওয়ায় এটি আর মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বলকে ঠেকিয়ে রাখতে পারে না, ফলে নক্ষত্রে ঘটে এক প্রচন্ড অন্তস্ফোরণ(Implosion)। নক্ষত্রটির বেশীরভাগ ভরই এর কেন্দ্রে সংকুচিত হয়ে পড়ে, আর গ্যাসীয় বাতাবরণটি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রবলবেগে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনাই সুপারনোভা বিস্ফোরণ হিসাবে পরিচিত। এই ধরনের বিস্ফোরণে বিপুল পরিমান শক্তি নির্গত হয় এবং সংশ্লিষ্ট নক্ষত্রটি সাময়িকভাবে পুরো ছায়াপথের চেয়েও বেশী উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
এই জাতীয় বিস্ফোরণকে নিষ্ক্রান্ত গ্যাসীয় পদার্থসমূহে উপস্থিত উদজানের পরিমান এর ভিত্তিতে ২ ভাগে ভাগ করা হয়- নির্গত পদার্থ উদজান সমৃদ্ধ হলে ধরন-২ আর উদজানের পরিমান অল্প হলে ধরন-১।
অনেক অনেক আগে থেকেই মানুষ সুপারনোভা সম্পর্কে জানত। ১০৫৪ খ্রীষ্টাব্দে চীনা জ্যোতির্বিদগণ একটি সুপারনোভা অবলোকন করেন বলে উল্লেখ পাওয়া যায়। সাম্প্রতিককালে বৃহৎ ম্যাজেলানিক মেঘে(LMC) SN1987A নামের যে সুপারনোভাটি সংঘটিত হয়েছে, তা প্রায় খালি চোখেই দেখা গিয়েছিল।
সুপারনোভা বিস্ফোরণে অনেক ভারি মৌল তৈরি হয়ে ছায়াপথে ছড়িয়ে পড়তে পারে।